স্টাফ রিপোর্টারঃ
পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলে শুনানি আগামী ৫ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ।বৃহস্পতিবার(১১ ডিসেম্বর ২২০৫ইং)প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।এর আগে গত ১৩ই নভেম্বর ২০২৫ইং হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। এরপর আপিল শুনানি শুরু হয়।গত ২০১১ইং সালের ৩০শে জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয় পরিবর্তন করে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়।এদিকে রাষ্ট্রপতি ২০১১ইং সালের ৩ই জুলাই এটির অনুমোদন দেন।ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবেসাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।এছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০করাহয়েছে। তবে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পূর্ণ বহাল এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ,সমাজ তন্ত্র,গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়।অসাংবিধানিক ভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়।আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও,ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।এই সংশোধনী বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের(সুজন)সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি।গত ১৯শে আগস্ট হাইকোর্ট রুল জারি করেন।সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না,জানতে চাওয়া হয় রুলে।পরে এই রুল সমর্থন করে সহায়তাকারী(ইন্টারভেনার)হিসেবে যুক্ত হন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণফোরামসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা।তাদের পক্ষে আইন জীবীরা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।এ ছাড়া নওগাঁর রানীন গরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোফাজ্জল হোসেনও রিট করেন।রুলের শুনানি শেষে গত বছরের ১৭ই ডিসেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। তাছাড়া রায়ের দিন ড.বদিউল আলম মজুমদারসহ অন্য আবেদনকারীর আইনজীবী ড.শরীফ ভুঁইয়া বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার বিধান বাতিল হলো,সংবিধান বাতিল ,স্থগিতকরণ এবং সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি সংশোধন অযোগ্য সংক্রান্ত ৭ ক এবং ৭ খ বাতিল হলো,মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের বিধান নিয়ে হাই কোর্টের ক্ষমতা কমানো বিষয়ক ৪৪(২)বাতিল করা হলো,এছাড়া ১৪২ অনুচ্ছেদে গণভোটের বিধান বাতিল করা হয়েছে।ফলে সংবিধানের প্রস্তাবনা ও কিছু অনুচ্ছেদ সংশোধনে আজকে রায়ে গণভোটের বিধান ফিরে আসছে ।রায়টিকে ঐতিহাসিক বলে এ আইনজীবী বলেন,৭ ক এবং খ,৪৪(২)ও ১৪২ অনুচ্ছেদ বিষয় রায়ের ফলে বাস্তবায়িত হয়ে গেল।পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধেই সুজন সম্পাদকসহ চার বিশিষ্ট ব্যক্তি লিভ টু আপিল করেন।অন্য তিন ব্যক্তি হলেন,এম হাফিজ উদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।মোফাজ্জল হোসেন আরেকটি লিভ টু আপিল করেন।জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারও একটি লিভ টু আপিল করেন।এ ছাড়া বিএনপির পক্ষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরীসহ কয়েকজন পক্ষভুক্ত হন।বদিউল আলম মজুমদারের আইনজীবীর দাবি পুরো সংশোধনী বাতিল করতে হবে বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ সময়:০২:১০ মিনিট
১১ই ডিসেম্বর ২০২৫ইং
এইচএমইএস